লেবুর কাল জাব পোকা
বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক উভয় অবস্থাতেই লেবু গাছের পাতার রস শোষণ করে ক্ষতি করে । ফলে লেবু গাছের সতেজ অবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হয়, পাতা ভীষনভাবে কুঁকড়ে যায়, কচি পাতা বিকৃত হয়, আক্রান্ত কোমল শাখা বিভিন্নভাবে বেঁকে যায় এবং লেবু পাতা ও ডগা স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ।এর আক্রমনে যে মধুরস নিঃসরণ করে তাতে সুটি মোল্ড ছত্রাকের আক্রমণ ঘটে।
১। লেবু বাগানে বড় আকৃতির হলদ রঙের প্লাস্টিকের গামলা কীটনাশক মিশ্রিত পানি রেখে দিলে তাতে আকৃষ্ট হয়ে অনেক পাখাযুক্ত জাবপোকা গামলার পানিতে পড়ে মারা যায় । হলুদ রঙের আঠাফঁদ পেতে তাতে পাখাযুক্ত জাব পোকাদের আকৃষ্ট করে সংখ্যা কমানো যায়। ২। জাব পোকার বেশ কিছু প্রাকৃতিক শত্রু রয়েছে যেমন পরজীবী লেডি বার্ড বিটল, সিরফিড ফ্লাই, লেসউইং, ক্যারাবিড বিট্ল ও পরজীবী বোলতা । এসব উপকারী পোকা সংরক্ষণ অর্থাৎ কীটসাশকের ব্যাবহার পরিহার করতে পারলে জাব পোকা প্রাকৃতিক নিয়মেই নিয়ন্ত্রিত হয় । ৩। আক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই জাব পোকার গায়ের উপর ছিটিয়ে দিলে এদের সংখ্যা কমে যায় । ৪। জাব পোকার সংখ্যা যখন কম থাকে তখন ঢোল কমলী পাতার নির্যাস স্প্রে করেও জাব পোকা দমন করা যায় । নির্যাস তৈরি করতে হলে কাঁচা ঢোল কলমীর পাতা সংগ্রহ করে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে । এরপর এই শুকানো পাতা ১ঃ৫ অনুপাত পানিতে যেমন ১ কেজি পাতা ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ মিনিট সিদ্ধ করা ঢোল কলমীর পাতা পানির মধ্যে কচলিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিতে হবে । এভাবে তৈরি নির্যাস গাছের আক্রান্ত অংশে স্প্রে করে দিলে জাব পোকা মারা যাবে । ৫। জাব পোকার আক্রমণ বেশি হলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে ।কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শ হলে একটি শাখা বা প্রশাখায় ৫০-১০০টি জাব পোকা দেখা গেলে সেখানে স্প্রে করা যেতে পারে । ৬। প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার এ্যাজাডিরেকটিন বা ২ মিলিলিটার ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি অথবা ১মিলিলিটার অ্যাসিফেট+ফেনভেলারেট ২৮ ইসি মিশিয়ে স্প্রে করলে জাব পোকা দমন করা যায়্ । ৭।শুষ্ক তামাক পাত ভিজানো পানি স্প্রে করলে জাব পোকার আক্রমণ কমে যায় । ৮। জাব পোকায় আক্রান্ত গাছে জোরালোভাবে পানি করে দিলে আক্রমণ কমে হয় । ৯। উপকারী ও অপকারী পোকার সংখ্যা যাচাই করে কীটনাষক প্রয়োগের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে । যদি উপকারী পোকার সংখ্যা বেশি থাকে তা হলে কীটনাশক ব্যবহার করা উচিত নয় ।